সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান: নজরবন্দি বাবার ছায়া থেকে ক্ষমতার শীর্ষে

সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান: নজরবন্দি বাবার ছায়া থেকে ক্ষমতার শীর্ষে বাদশাহ আবদুল্লাহর মৃত্যুর পর ২০১৫ সালে ক্ষমতায় আসেন সালমান বিন আবদুল আজিজ। শুরুতে তিনি সৎভাই মুকরিন বিন আবদুল আজিজকে যুবরাজ ঘোষণা করলেও অল্প সময়ের মধ্যেই তাঁকে সরিয়ে দিয়ে ভাইপো মোহাম্মদ বিন নায়েফকে সে পদে বসান। একই সময়ে নিজের তরুণ ছেলে মোহাম্মদ বিন সালমানকে ডেপুটি ক্রাউন প্রিন্স ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেন। তখন খুব কম মানুষই এমবিএস নামে পরিচিত এই যুবরাজের নাম শুনেছিলেন। পরিবারের ভেতরে ক্ষমতার দখল প্রতিরক্ষামন্ত্রী হওয়ার পর থেকেই তিনি ধীরে ধীরে বাবাকে এক প্রকার নিয়ন্ত্রণে আনেন। ঘনিষ্ঠ আত্মীয় এমনকি নিজের মায়ের সঙ্গেও বাদশাহর যোগাযোগ সীমিত করে দেন। পরবর্তীতে ভাইপো ও যুবরাজ মোহাম্মদ বিন নায়েফকে এক রাতে নাটকীয়ভাবে গৃহবন্দী করে পদত্যাগে বাধ্য করা হয়। ইয়েমেন যুদ্ধ ও আন্তর্জাতিক সমালোচনা ২০১৫ সালের মার্চে ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে আক্রমণ চালিয়ে দেন তিনি। প্রথমে জনসমর্থন পেলেও দ্রুতই এই যুদ্ধ সৌদি আরবের জন্য সমালোচনার কারণ হয়ে ওঠে এবং আন্তর্জাতিক মহলে এমবিএসের পররাষ্ট্রনীতি নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। সংস্কার ও পরিবর্তনের নামে কড়াকড়ি নারীদের গাড়ি চালানোর অনুমতি দেওয়া ও পোশাকে শিথিলতা আনার মতো পদক্ষেপ তাঁকে তরুণ প্রজন্মের কাছে জনপ্রিয় করে তোলে। তবে সমালোচকরা বলেন, এসব ছিল অর্থনৈতিক কৌশল, প্রকৃত স্বাধীনতা নয়। একই সময়ে শুরা পরিষদ বা প্রথাগত পারিবারিক পরামর্শ প্রথা ভেঙে দিয়ে নিজেকে একক ক্ষমতার অধিকারী হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেন তিনি। দুর্নীতি বিরোধী অভিযানে গ্রেপ্তার ২০১৭ সালে দুর্নীতির অভিযোগে শতাধিক প্রিন্স, ব্যবসায়ী ও শীর্ষ কর্মকর্তা আটক হন এবং তাঁদের কাছ থেকে বিপুল অর্থ আদায় করা হয়। এই অভিযানকে অনেকে রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীদের দমন হিসেবেই দেখেছেন।

Comments